খিয়াং আদিবাসীর সংগীত ও নৃত্য
পার্বত্যাঞ্চলে ১১টি আদিবাসীদের সাথে খিয়াংরাও যুগ যুগ ধরে বসবাস করে আসছে । এক সময় ছিল যখন খিয়াংরা তাদের গ্রাম্য জীবনে বিভিন্ন আনন্দ উৎসবে মেতে থাকত । জুমে যেটুকু ফসল তাদের উৎপাদন হত, সেই ফসল দিয়ে সারা বছরই চলে যেত । বর্তমানে যে জাতিসত্তার জীবন হুমকির সম্মূখীন সেখানে কতটুকুইবা তাদের সংগীত, নৃত্য ইত্যাদি সংরক্ষিত থাকবে । বিশেষজ্ঞদের মতে, কোন জাতিসত্তার মধ্যে যদি ১০ হাজারের জনসংখ্যা কম থাকে, তাহলে সেই জাতির অস্তিত্ব বিলুপ্তি ঘটবে এতে সন্দেহ নেই । বাংলাদেশে ১৯৯১ সালের আদম শুমারী মতে ১,৯৫০ জন। কিন্তু খিয়াংরা দাবী করেছেন তাদের জনসংখ্যা প্রায় ৪ হাজারের মত । ইতিমধ্যে খিয়াংদের অনেক ঐতিহ্য, সংস্কৃতি হারিয়ে গেছে । তার প্রধান কারণ হল তাদের মধ্যে শিক্ষার অভাব । তাই কথায় বলে, যে জাতি যত শিক্ষিত তার সংস্কৃতিও তত উন্নত । যেখানে এখন দু’বেলা খাবার জোটেনা, সেখানে তারা সংস্কৃতির পরিচর্য্যা কিভাবে ঘটাবে । যেখানে একটি গোষ্ঠী বা জাতিসত্তা বিলুপ্তির পথে, সেখানে সংগীত নৃত্যতো মূল্যহীন । কোন জাতির মধ্যে যখন শিক্ষার আলো আসে, তখনই তাদের মধ্যে সংগীত বা নৃত্যের সৃষ্টি ঘটে । পৃথিবীতে অনেক জাতির মধ্যে শিক্ষিত হবার সাথে সাথে সংগীত ও নৃত্যের সৃষ্টি ঘটিয়ে তাদের সংস্কৃতিকে তারা সমৃদ্ধি করে তুলেছে । তা বলে অন্যান্যদের মধ্যে ঐতিহ্যগতভাবে সংগীত বা নৃত্য নেই তা বলছি না । যখনই কোন জাতির মধ্যে সংগীত বা নৃত্য তৈরী করা হয়, তখনই সংগীত বা নৃত্যের সৃষ্টি হয়েছে । মানুষ যা কিছু ধারণ করে যুগ যুগ ধরে লালন করে তাই সংস্কৃতি ।
খিয়াংদের একটি সংগীত রয়েছে যা শত শত বছর ধরে মুখে মুখে রচিত হয়ে আসছে । বর্তমানে তাও আবার হারিয়ে যেতে বসেছে । তাছাড়া শিশুদের ঘুম পাড়ানি গান এখনো কিছু কিছু খিয়াং রমণীদের গাইতে শুনা যায় । বর্তমানে কিছু খিয়াং গান রচিত হচ্ছে । তারই মধ্যে উৎসব, পুজা-পার্বণ, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের গান উল্লেখযোগ্য ।
অতীতে খিয়াংরা বিভিন্ন উৎসব, পূজা-পার্বণ ও সামাজিক অনুষ্ঠানাদি জাক-জমকপূর্ণভাবে উদ্যাপন করত । সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে এই সকল উৎসব আর খিয়াং গ্রামে দেখা যাচ্ছেনা । তার একমাত্র প্রধান কারণ অর্থনৈতিক সমস্যা ।
জুম নৃত্য :
খিয়াংদের প্রধান উপজীবিকা জুম চাষ । দল বেঁেধ পাহাড়ের উচু নীচু পথ বেয়ে আনন্দে একসাথে জুমে যায় । জুম চাষ উপলক্ষ্যে তারা বিভিন্ন আনন্দ উৎসব করে থাকে । জুমের ধান রোপণ থেকে ঘরে ধান উঠানো পর্যন্ত আনন্দে মেতে উঠে । জুমের ধান ঘরে তোলার পর এ সময় গ্রামগুলো নতুন ধানের চাউলের নানান পিঠার মৌ মৌ গন্ধে ভরে উঠে । এ সময় তারা বিভিন্ন আনন্দ উৎসবের সাথে সাথে মদ্য পান করে নৃত্য আর গান পরিবেশন করে থাকে । জুম চাষ উপলক্ষ্যে জুম নৃত্য তারা দল বেঁেধ পরিবেশন করে থাকে। জুম নৃত্যের গানের কথাগুলো নিুরুপ:-
চে চে চে লোউয়া চে
চে চে চে লাইয়া চে
বি ফুলা কয় ফুলা
প প্যয় হ্লং চে(২)
১। লোউয়া নাংকেই চেতং খ মোক সুনা
লাইয়া হ্নাকেই চেতংখ চং চেহ্ আ
ক্ষনি অকয় দেক, হ-অ-অয় দেক
হ্নাকেই খেয়া বিয়েইহ্ স্ ইখিন
এথেনেই দেক ।
২। লোউয়া হ্নাকেই চেতংখ প্যয় পুলা
চংচেলা হ্নাকেই চেতংখ পেং ইমা
চং তানঙ খ, ফিতং থনং খ
হ্নাকেই খেয়া বিয়েই স খিন
এথেনেই দেক ।
(কথা ও সুর: থয়সাপ্র“ খিয়াং, রচনাকাল ১৯৯৯ইং)
অনুবাদ:
চল্ চল চল্ জুমে যাই
চল্ চল্ চল্ জমিতে যাই
কাজ কর্ম করে
আনন্দে নেচে যাই ।
১। জুমে আমরা যাই ধানের বীজ বুনতে
জমিতে আমরা যাই ধান রোপণ করতে
সুর্য উঠেছে, পাখিরা গান গেয়েছে
আমাদের সকলের কাজের সময়
হয়ে গেছে ।
২। জুমে আনন্দে মোরা চল যাই
ধান মারতে চল যাই জুম ঘরে
ধান কাটবো, থুরুং এ ভরব
আমাদের জন্য কাজের সময়
ঘনিয়ে আসছে ।
হেনেই (বর্ষবরণ নৃত্য):
হেনেই উৎসবটি বছরে তিন বার অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে । হেনেই অনুষ্ঠানটি বাংলায় বর্ষবরণ বলা যেতে পারে । পুরাতন বছরকে পিছনে ফেলে দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে এ সময় খিয়াংরা আনন্দে মেতে উঠে । এ সময় পশু বলির মাধ্যমে গানে গানে নৃত্যের তালে তালে হেনেই উৎসবটি পালন করে থাকে । হেনেই উৎসবে তারা ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশন করে থাকে । এ সময় তারা ঢোল ও অন্যান্য বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে থাকে । হেনেই উদ্যাপনের নিমিত্ত এই গানটি নৃত্যের মাধ্যমে পরিবেশন করে থাকে ।
নি খোমহ্নিপ থাঅং নাংকেই
প-প্যয় হ্ললং অয়অং খ্ (২)
দু:খোং দু:খ্ াহ্ঙিলোং পুলা
হ্নাকেই অপয় স্ লম তেমঅং খ্ ।।
১। চেতস্ খোকুম হ্ঙিলোং পুলা
হ্নাংকেই লোআই স্ খোকুম পুজ অং খ্
লানসু খেতনু হ্ঙিলোং পুলা
নাংকেই তা-নও চিনও লূপ
উতু মেইঅং খ্
২। অম খোকুম কোং তকপুলাচে
নাংকেই অমপতা উতু চেতঅং খ্
লেনচ্ লেকচ হিঙেলাং পুলা
নাংকেই বাংলা প্রেঅংউতু মেইঅং খ্ ।।
(কথা ও সুর:থয়সাপ্র“ খিয়াং, রচনাকাল ১৯৯১ইং)
অনুবাদ :
এই নতুন দিনে আমরা আনন্দে নেচে গাই,
দু:খ কষ্ট ভুলে গিয়ে আমরা ভাল পথ অনুসরণ করি ।
১। বিগত বছরের সব কিছু ভুলে গিয়ে
আমরা এ বছরকে বরণ করে নিই
শত্র“ মিত্র সকল ভুলে গিয়ে
ভাই বোনের মত একত্রে থাকবো ।
২। অন্য আরেকটি বছরের কথা চিন্তা করে
সামনের দিকে একসাথে এগিয়ে যাই
ধনী, দরিদ্র, ছোট, বড় ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে
আমরা এদেশে একই সাথে অবস্থান করবো ।
পূজা পার্বণ নৃত্য: অতীতে খিয়াংরা প্রকৃতির পূজারী ছিল । পরবর্তীতে তারা বৌদ্ধ ধর্মে দিক্ষিত হয়ে বৌদ্ধ ধর্মের নিয়ম-কানুন ইত্যাদি পালন করে থাকে । খিয়াংদের বিভিন্ন রকম পূজা পার্বণ অনুষ্ঠানে এই নৃত্যটি পরিবেশন করে থাকে । তারা তাদের বিশ্বাস অনুসারে বিভিন্ন দেব-দেবীদের নিকট পূজা অর্চণা দিয়ে থাকে । এ সময় তারা এই সকল পূজা পার্বণের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন দেব দেবীদের নিকট তাদের মানত পূর্ণ আকাঙ্খায় পূজা ও নৃত্য পরিবেশন করে থাকে ।
হ্যউ চ: খোলও হ্নাকেই আই ফিহ্
খোমহ্নিপ থা হ্ঙাৎ লো
তোংস খোলও হ্নাকেই আই ফিহ্
অপ্য খোম হ্নিপ লো
১। হ্নাকেই খে আ: খ্রং সুই: সোং তিহ্
লেনচ: আথন দেওক
হ্নাকেই দুখা: খ্রং সো আই: তিহ্
খ্রং হাঙাৎ নিবুন দেওক
ঐ কোওংনি লো ন: খোলওং
প্যয়বোং প্যয়বা অয়ওং খো ।।
২। ঙুলাই দুখা: হ্ঙিলোং পুলা
জেল খ্যায়ামশা লম তেমওং খো
লেনচ: লেকচ: হেলতিয়া পাক্
চুলু পোংবে মেইওং খো:
ঐ কোংনি লো ন: খোলওং
সায়োং সায়া লমওং খো ।।
(কথা ও সুর: টমাস তন খিয়াং ১৯৯২ইং)
অনুবাদ:
খিয়াংদের জন্য আজ
নতুন দিন এসেছে
অন্যান্য সম্প্রদায়ের জন্যও
এই দিন আনন্দের ।
১। আমাদের তত্ত্বাবধানের নিমিত্ত
বড় একজনের আগমন ঘটেছে
আমাদের দু:খ কষ্ট দেখার জন্য
একজনকে পেয়েছি ।
২। পাপ ও কষ্ট ভুলে গিয়ে
শান্তির পথ অনুধাবন করব
ধনী দরিদ্র ভেদাভেদ ভুলে
একত্রে বসবাস করব
এই জন্য সকলে এস
আনন্দে নেচে গান গায় ।
সামাজিক অনুষ্ঠানের নৃত্য:
খিয়াংরা সমাজে বিভিন্ন রকম সামাজিক অনুষ্ঠান করে থাকে । যেমন:বিবাহ অনুষ্ঠান, শিশু সন্তানের নামকরণ, কান ফোঁড় ইত্যাদি অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে । সেই সব অনুষ্ঠানে তারা আনন্দের মাধ্যমে নৃত্য ও বিভিন্ন ধরনের গান পরিবেশন করে থাকে ।
খোমহ্নিপ ওলো দক খোমহ্নিপ ওলো দক
খোনী অকয় দক খোনী অকয় দক
তোংস খোলও তোংস খেলও
অপ্যয় স খিন ওলো দক ।।
১। তিহ্নিপ খোমহ্নিপ লেন ওং
নাংহ্নিহ কেঞ্জু থাওং
চুলু পোংবে মেইপুলা
প প্যয় হ্ল হ্লং মেইওং খ্ ।।
২। খ্রং জাপ স্ হুইহ্ পয়েই হ-মনা
নাংকেই উতু মেইওং খ্
নিকুত বিনেই পুলা হ্নাংকেই
অপয় স্ লম তেমেং খ্ ।।
অনুবাদ:
নতুন দিন এল, নতুন দিন এল
ভোর হয়েছে, সূর্য উঠেছে
আন্যান্য আদিবাসীদেরও
আনন্দের দিন এসে গেছে ।
১। আজকের এই নতুন দিনে
তোমাদের সহযোগিতায়
আমরা একত্রে মিলে মিশে
আনন্দে একত্রে বসবাস করি ।
২। অন্যান্যদের মত সুন্দর পথে
আমরাও একত্রে মিলে মিশে থাকব
একে অপরের হাত ধরে
শান্তির দিকে এগিয়ে যাব ।
দেশ ও প্রকৃতির গান : বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের পার্বত্যাঞ্চলে এক সময় জীব ও প্রাণবৈচিত্রে পরিপূর্ণ ছিল । এখানকার আদিবাসীরা বন, পাহাড় ও ঝর্ণাধারা নিয়ে প্রকৃতির সাথে তাদের জীবনকে একাকার করে সম্পৃক্ত করে তুলেছে । বন জঙ্গলে তাদের অবাধ বিচরণ ছিল । তাদের জীবন জীবিকা ছিল পাহাড় কেন্দ্রীক । তাই অন্যান্য আদিবাসীরাও এদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বিমুহিত হয়ে পাহাড়, নদী ও ঝর্ণাধারার কল কল শব্দের মাঝে রচিত করেছে দেশ, প্রকৃতি ও ভালবাসার গান । তাইতো খিয়াং আদিবাসীদের কন্ঠেও ধ্বনিত হয়েছে এদেশের বন, পাহাড়, নদী ও ঝর্ণাধারা নিয়ে সৌন্দর্য আর সৌহার্দের গান । যেভাবে পাহাড় ও ঝর্ণাধারা এবং পাহাড় ও নদী একে অপরের সাথে ভালবাসার বন্ধনে মিশে রয়েছে । দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিয়ে লেখা গানের কথাগুলো নিুে দেয়া হল:
হ্নাংকেই খেনী চুমেই ওং ফুলাচে
প্যয় ফুলাচে অয়ওং খো
নি প্রে পয় স্ খ্রাং
নি প্রে হূই: জেল খ্যায়ামসা প্রে চে
হ্ঙাতাহা মেইয়াহ্
১। খুয়ুংলা হ্লোং হ্নিসক চেননি
উতু হ্নি মেই ন:
তোংস খেহা চুলু পোং বে
উতু নিমেই ন্
ঐ কোওং নি ইনিলুং কো খেনী
হ্ঙালা হাঙাৎ কেহ্ হমতেই ফুলা
চুলু পোংবে মেইওং খ:
২। নি প্রে ওংকোহ্ খ্রংলো হ্নাকেই
তোংস থেনহাচে
নি প্রে স্ ল্ হ্নাকেই হাচে
হ্যউচ: থেন হাচে
ঐ কোওং নি নি প্রে খ্রী তুইলা
হ্নাকেই খেহা খ্রং হম্ৎ চাক খেহ্
অহ্ঙ জাপ খেল হমৎ স: হ্ইূ:
(কথা ও সুর টমাস তন খিয়াং ১৯৯০ইং)
অনুবাদ:
আমরা সকলে মিলে মিশে
আনন্দে গান গাই
দেশের ভাল বিষয় সকল
এ দেশের মত শান্তি সম্প্রীতির
দেশ আর কোথাও নেই ।
১। পাহাড় ও ঝর্ণা আজীবন
একই সঙ্গে রয়েছে
আমরা আদিবাসীরাও একত্রে
একই সাথে রয়েছি
সেইজন্য আমাদের মন সকল
পরস্পরের সাথে একাকার হয়ে
একই সাথে থাকবে ।
২। এ দেশের মানুষ আমরা
যদিও হই আদিবাসী
এ দেশের নাগরিক
যদিও বা হই খিয়াং আদিবাসী
সেইজন্য এ দেশের বাতাস আর পানি
আমাদের যেভাবে চিনে নিয়েছে
অন্যান্যদেরও সেভাবে চিনে ।
ভালবাসার নৃত্য ও গান:
এই গানটি নেপালী সুর ও ছন্দে রচিত হয়েছে । এই নাচের মর্মার্থ হল: একজন খিয়াং ছেলে ও মেয়ে পাহাড়ের উপর একটি গ্রামে হেসে খেলে কৈশর পেড়িয়ে যৌবনে পদার্পন করেছে । এখন তারা স্বপ্ন দেখছে সুখের সংসার গড়ে তুলতে । তারা এভাবে আর এভাবে একাকীত্ব জীবন কাটাতে জায় না । তারা ঘরের গন্ডির মাঝে থাকতে চাচ্ছে না । তারা পাহাড় আর প্রকৃতির মাঝে দূরে কোথাও পালিয়ে গিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চায় । এজন্যই তারা গানের সুরে নৃত্যের ছন্দে এই নৃত্যটি পরিবেশন করে থাকে ।
আ..... ইমা চেতাহ্ ঙা, ইমা চেতাইহ্ ঙা
চেতাইহ্ ঙাসং কুলুং কো আলুয়াহ্ সগ্র
উ....................উ................উহু উহু উহু
সাংলান খিন ওলো দক্ নু
ও সাংলান খোমহ্নিপ ওলো দক নু
চংথাওং হা ইনি পোহ্ এ আই
সাংলান খিন ওলো দক্ নু
আ......চোং ক্রং চলা হ্ঙক হ্ঙু চ হেইহ্
চোং ক্রং চলা হ্ঙক হ্ঙু চ হেইহ্
নি খুয়ুং থেত হুইহ্ ইহ্নি হ্লিয়েই স্
চোং ক্রং চলা হ্ঙক হ্ঙু চ্ হেইহ্ ।।
উ...................উ................উহু উহু উহু
আ......খুয়ুং লা হ্লোং খেতেই স্ হুইহ্
খুয়ুং লা হ্লোং খেতেই স্ হুইহ্
লেকচ: খ-থোউহ্ উতু ইহ্নি মেই স্
আ......ইখিন মেইখ্ লমঅং অয়অং
ইখিন মেই খ্ লমঅং অয়ং
নাংহ্নিহ্ খেনী আহ্নিহ্ হুইহ্ খেতং মেই ন অং
উ...................উ...................উহু উহু উহু
নাংলা কেই ইনিহ্লিয়েই স্
ও নাংলা কেই ইনিহ্লিয়েই স্
এই খ্রং খেল খেলা নি হমৎ চাক খেহ্
নাং লা কেই ইহ্নিহ্লিয়েই স্
আ......ইম লোউ উতু বিয়েই ফুলা চে
ইম লোউ উতু বিয়েই ফুলা চে
খ্রং জাপ স্ হুই সোফা হ-মনা
ইম লোউ উতু বিয়েই ফুলা চে..।।
উ..................উ.......................উহু উহু উহু
আ......হ্যউ প্রে হ্যউ থোং অং আহ্নিহ্ হুইহ্ চে
হ্যউ প্রে হ্যউ থোং অং আহ্নিহ্ হুইহ্ চে
জেলখ্যায়ামসা তিহ্ উহা মেই য়াহ্ নু
আ.....লুডিল ব্রাতং আনিহ্ খেত চে
লুডিল ব্রাতং আনিহ্ খেত চে
নি প্রেবাত স্লা ইনি হমত চাক খেহ্
উ..................উ.......................উহু উহু উহু
(কথা ও সুর: থয়সাপ্র খিয়াং ২০০০ইং
খিয়াংদের অতি প্রাচীন বা যুগ যুগ ধরে মুখে মুখে রচিত একটি গান,-
বেলেক চ্ও খ্রহোমও
লুংখিং লুংখিয়াং নেমেই ন্ তি-এই
তেকতেলেন লা থিং পোক স্ চে
কেইবে লেক চ্লা হেউ সুই সতিং কিখিন নু
সুগ্লু সেই অং চং ফোউ বে-ই
লংবয়হ্ খ্রাওং চং হো বে-ই
সকি খো ওং চং চেল বে-ই ।
অঙ তেউয়া বেন লু-আক হূইহ্
উই থেই তেউয়া য়োং পুমাক হূইহ্
সুসিম তেউয়া লানসু তেউয়া
লুখিং লুখিয়াং নেমেই ন্ তি-এই ।
অনুবাদ: জোছ্নার আলোর মত ভাই আমার, একা একা তুমি রয়েছো, কাঠ-ঠোকরা পাখি গাছ ঠোকরানোর শব্দে মনে হচ্ছে, তুমি বনে লাকড়ি সংগ্রহ করছো, আমলকীর পাতায় ধানগুলো শুকিয়ে দিও, এক প্রকার বড় পাখির পালকে ধানগুলো ঝেড়ে নিও আর হরিণের মত পায়ে ধানগুলো নেড়ে যেও । কাকের ঝাঁকের মাঝে একটি বকের মত, শিকারী কুকুরের মাঝে একটি বানরের মত, নির্জন পাহাড়ের শক্রর মত একা একা রয়েছো তুমি ।
উপসংহার : ইতিমধ্যে ক্ষুদ্র জাতিসত্তা খিয়াং আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিগুলো এরই মধ্যে বিলুপ্ত হয়েছে । সেইজন্য এদের সংরক্ষণে অন্যান্য সংখ্যা গরিষ্ঠদের সাহায্যের হাত প্রসারিত করা একান্ত আবশ্যক । বর্তমানে শিক্ষিত এবং সচেতন খিয়াংদের নিজেদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষার্থে এগিয়ে আসতে হবে । দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, বেশ কয়েক বছর আগে ঢাকা জাতীয় জাদুঘর পরিদর্শন করার সুযোগ হয়েছিল । সেখানে বাংলাদেশের সকল আদিবাসীদের পোষাক পরিচ্ছদ, অলংকারাদি ও ব্যবহার্য জিনিষপত্রের নিদর্শন রয়েছে । কিন্ত খিয়াংদের সে ধরনের কোন কিছুরই চোখে পড়েনি । বাংলাদেশের অনেক মানুষই খিয়াংদের সম্পর্কে অবগত নন । খিয়াংদের সংরক্ষণে ও রক্ষণাবেক্ষনের জন্য বাংলাদেশ সরকারসহ সকলকে এগিয়ে আসতে হবে । যাতে করে খিয়াংরাও এদেশের প্রাচীনতম অধিবাসী হিসেবে বেঁচে থাকার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয় ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন